০৬ জুন ২০১৩
পাস্তা বা নুডলস তো ইটালিয়ান খাবার, কিন্তু আজকাল সারা বিশ্বের সব দেশে যেভাবে পাস্তা চলছে, তাতে এটা যে ইটালিয়ান একটা খাবার, সেটা প্রায় ভুলেই গিয়েছে সবাই। তবে আর যাই হোক রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার করতে গেলে কিন্তু একটু ইটালিয়ান ইটালিয়ান ভাবটা চলে আসে। ভেবেও মনে হয় মনটা একটু শান্তি পায়। যাই হোক, বাসায় যখন পাস্তা রান্না করি আমরা, তখনও কিন্তু ইটালিয়ান খাবার মনে করেই খেতে পারি। আর যখন রেসিপিটা দেশে উতপাদিত উপাদান দিয়ে করা হয়, তখন কিন্তু এটাকে ইটালিয়ান না বলে কিছুটা ফিউসন বলাটাই উচিত। অন্ততঃ সস বা টেস্ট এলিমেন্টের জিনিসগুলি যখন দেশী হয়, তখন এটা পুরোই ফিউসন।
আজ যা নিয়ে লিখছি, তা কিন্তু শুধু পাস্তা নয়, সাথে রয়েছে চিকেন ব্রোস্ট এবং ভেজিটেবল। এই চিকেনের রেসিপির আইডিয়াটা কিন্তু আমরা ধার করেছি আমাদের প্রিয় ফুড ব্লগার উদরাজী ভাই আর ভাবীর কাছ থেকে। আমরা অবশ্য নিজেদের কিছুটা টেস্ট পার্সেপসন এখানে প্রয়োগ করেছি। এর ফলে যা হয়েছে সেটা বলা যায় ফিউসনের ফিউসন! আর পাস্তার সাথে চিকেন আর ভেজিটেবল থাকাতে এটা একটা সম্পূর্ণ খাবার হয়েছে বলেই মনে হয়েছে। তবে এই ফিউসনের এক্সপেরিমেন্ট কিন্তু খেতে খারাপ হয়নি। আমাদের মূল লক্ষ্য মোটামুটি সবসময়ই থাকে ভালোমত ছবি তোলা। কিন্তু ছবি তোলার পরে আমরা যেহেতু সেগুলোর সদ্ব্যবহার করি, তাই স্বাদ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার থাকেই।
আমাদের এই ডিসটাতে প্রধান হিরো চিকেন হলেও, সেকেন্ড হিরো ভেজিটেবলও কম যায় না। এবং এই হিরোদের টেস্টকে সম্পূর্ণ করার জন্য আর পুরো ডিসটিকে পরিপূর্ণ করার জন্য সাথে ছিল মিঃ পাস্তা। প্রধান হিরো চিকেন বলছি এই কারণে যে চিকেনকে মেরিনেট করে ঘন্টা দু'য়েক রাখতে হয়েছিল! চিকেন ব্রোস্টগুলিকে আড়াআড়িভাবে চিরে নিয়েছিলাম। আর এর সাথে যুক্ত করেছিলাম আদা-রসুন বাঁটা, ওইস্টার সস, চিলি চিকেন সস, গোল মরিচ, লবণ ও তন্দুরী মসলা। সব উপকরনকে চিকেনের সাথে মাখিয়ে ঘন্টা দু'য়েকের জন্য রেফ্রিজারেটরে রেখে দিয়েছিলাম।
মুরগী মেরিনেসনের পর সেকেন্ড হিরো সব্জিগুলিকেও রেডি করে ফেলেছিলাম। ক্যাপসিকাম, গাজর, পিঁয়াজ ও টমেটো - এই সব্জিগুলা নির্বাচিত করেছিলাম কারণ এর মধ্যে পুষ্টিগুণের মোটামুটি সমাহার রয়েছে। গাজরে যেখানে রয়েছে ভিটামিন 'এ'-এর আড্ডা, ক্যাপসিকামে রয়েছে ভিটামিন 'সি', আর টমেটোতেও রয়েছে ভিটামিন 'সি' আর 'কে'। আর এই সবগুলি সব্জিই খনিজ পদার্থের আখড়া! তাছাড়া চোখের সৌন্দর্য বলেও একটা কথা আছে। এতগুলি সুন্দর রঙ যদি প্লেটের মাঝে নাচানাচি শুরু করে দেয়, তাহলে সেই খাবার না খেয়ে থাকা মনে হয় সম্ভব নয়।
অনেকক্ষণ হিরোদের গুণাগুণ সম্পর্কে বললাম। এখন চলে যাচ্ছি রান্নাঘরে। পাস্তাটাকে (ফেটুচিনি পাস্তা, fettuccine) আলাদা বিশেষ কিছু করিনি। খালি তেলের মধ্যে ফিস সস ও গোল মরিচ দিয়ে হাল্কাভাবে রেঁধে নিয়েছি। পাস্তা ভাজা হয়ে যাবার পর মেরিনেট করা মুরগীগুলি মাঝারি আঁচে স্যালো ফ্রাই করে নিয়েছি। যেহেতু মুরগীর টুকরাগুলি আগে থেকেই মেরিনেট করা ছিল, তাই মুরগী ভাজতে ৫ মিনিটের বেশী সময় লাগেনি।
মুরগী ভাজা হয়ে যাবার পর ওই একই ফ্রাই প্যানে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে সব্জিগুলি দিয়ে সঁতে করে নিয়েছি। আগেই বলে রাখি, সব্জির মধ্যে সামান্য লবণ ও বেঁচে যাওয়া মেরিনেটের মসলার সাথে আরেকটু চিলি সস ও কয়েকটি কাঁচা মরিচ যোগ করেছিলাম। সব্জিটা একটু কড়া আঁচেই সঁতে করেছি।
ব্যাস! গরম গরম থাকতেই পাস্তা, ভেজিটেবল ও চিকেন খাবার জন্যে রেডি, কিন্তু আমরা যেহেতু আগে ফটোসেসন করি খাবারের, আমাদের তাই কিছুটা ঠান্ডাই টেস্ট করতে হয়েছে। আহা! ঠান্ডাটাই যদি এত্ত মজা হয়, তবে গরম গরম খেতে না জানি কেমন ছিল!
আপনাদের মতামত দিয়ে ভুলে যাবেন না যেন। আবারও নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হবো শিগগিরই।
আমাদের চিকেন নিয়ে লেখা অন্য পোস্টগুলিঃ
সরিষা-পুদিনা চিকেন ফয়েল বারবিকিউ
চিলি চিকেনের সাথে গাজর
বাঁটা পিঁয়াজে চিকেন ভুনা
স্টাফড চিকেন ব্রেস্ট, সাথে পনির ও পুদিনা
চিকেন সালাদ উইথ সামার ভেজি
চিলি-লাইম চিকেন
চিকেন স্ট্রিপ কাবাব
পেস্তো পাস্তার সাথে চিকেন বল
পাস্তা বা নুডলস তো ইটালিয়ান খাবার, কিন্তু আজকাল সারা বিশ্বের সব দেশে যেভাবে পাস্তা চলছে, তাতে এটা যে ইটালিয়ান একটা খাবার, সেটা প্রায় ভুলেই গিয়েছে সবাই। তবে আর যাই হোক রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার করতে গেলে কিন্তু একটু ইটালিয়ান ইটালিয়ান ভাবটা চলে আসে। ভেবেও মনে হয় মনটা একটু শান্তি পায়। যাই হোক, বাসায় যখন পাস্তা রান্না করি আমরা, তখনও কিন্তু ইটালিয়ান খাবার মনে করেই খেতে পারি। আর যখন রেসিপিটা দেশে উতপাদিত উপাদান দিয়ে করা হয়, তখন কিন্তু এটাকে ইটালিয়ান না বলে কিছুটা ফিউসন বলাটাই উচিত। অন্ততঃ সস বা টেস্ট এলিমেন্টের জিনিসগুলি যখন দেশী হয়, তখন এটা পুরোই ফিউসন।
আজ যা নিয়ে লিখছি, তা কিন্তু শুধু পাস্তা নয়, সাথে রয়েছে চিকেন ব্রোস্ট এবং ভেজিটেবল। এই চিকেনের রেসিপির আইডিয়াটা কিন্তু আমরা ধার করেছি আমাদের প্রিয় ফুড ব্লগার উদরাজী ভাই আর ভাবীর কাছ থেকে। আমরা অবশ্য নিজেদের কিছুটা টেস্ট পার্সেপসন এখানে প্রয়োগ করেছি। এর ফলে যা হয়েছে সেটা বলা যায় ফিউসনের ফিউসন! আর পাস্তার সাথে চিকেন আর ভেজিটেবল থাকাতে এটা একটা সম্পূর্ণ খাবার হয়েছে বলেই মনে হয়েছে। তবে এই ফিউসনের এক্সপেরিমেন্ট কিন্তু খেতে খারাপ হয়নি। আমাদের মূল লক্ষ্য মোটামুটি সবসময়ই থাকে ভালোমত ছবি তোলা। কিন্তু ছবি তোলার পরে আমরা যেহেতু সেগুলোর সদ্ব্যবহার করি, তাই স্বাদ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার থাকেই।
আমাদের এই ডিসটাতে প্রধান হিরো চিকেন হলেও, সেকেন্ড হিরো ভেজিটেবলও কম যায় না। এবং এই হিরোদের টেস্টকে সম্পূর্ণ করার জন্য আর পুরো ডিসটিকে পরিপূর্ণ করার জন্য সাথে ছিল মিঃ পাস্তা। প্রধান হিরো চিকেন বলছি এই কারণে যে চিকেনকে মেরিনেট করে ঘন্টা দু'য়েক রাখতে হয়েছিল! চিকেন ব্রোস্টগুলিকে আড়াআড়িভাবে চিরে নিয়েছিলাম। আর এর সাথে যুক্ত করেছিলাম আদা-রসুন বাঁটা, ওইস্টার সস, চিলি চিকেন সস, গোল মরিচ, লবণ ও তন্দুরী মসলা। সব উপকরনকে চিকেনের সাথে মাখিয়ে ঘন্টা দু'য়েকের জন্য রেফ্রিজারেটরে রেখে দিয়েছিলাম।
মুরগী মেরিনেসনের পর সেকেন্ড হিরো সব্জিগুলিকেও রেডি করে ফেলেছিলাম। ক্যাপসিকাম, গাজর, পিঁয়াজ ও টমেটো - এই সব্জিগুলা নির্বাচিত করেছিলাম কারণ এর মধ্যে পুষ্টিগুণের মোটামুটি সমাহার রয়েছে। গাজরে যেখানে রয়েছে ভিটামিন 'এ'-এর আড্ডা, ক্যাপসিকামে রয়েছে ভিটামিন 'সি', আর টমেটোতেও রয়েছে ভিটামিন 'সি' আর 'কে'। আর এই সবগুলি সব্জিই খনিজ পদার্থের আখড়া! তাছাড়া চোখের সৌন্দর্য বলেও একটা কথা আছে। এতগুলি সুন্দর রঙ যদি প্লেটের মাঝে নাচানাচি শুরু করে দেয়, তাহলে সেই খাবার না খেয়ে থাকা মনে হয় সম্ভব নয়।
অনেকক্ষণ হিরোদের গুণাগুণ সম্পর্কে বললাম। এখন চলে যাচ্ছি রান্নাঘরে। পাস্তাটাকে (ফেটুচিনি পাস্তা, fettuccine) আলাদা বিশেষ কিছু করিনি। খালি তেলের মধ্যে ফিস সস ও গোল মরিচ দিয়ে হাল্কাভাবে রেঁধে নিয়েছি। পাস্তা ভাজা হয়ে যাবার পর মেরিনেট করা মুরগীগুলি মাঝারি আঁচে স্যালো ফ্রাই করে নিয়েছি। যেহেতু মুরগীর টুকরাগুলি আগে থেকেই মেরিনেট করা ছিল, তাই মুরগী ভাজতে ৫ মিনিটের বেশী সময় লাগেনি।
মুরগী ভাজা হয়ে যাবার পর ওই একই ফ্রাই প্যানে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে সব্জিগুলি দিয়ে সঁতে করে নিয়েছি। আগেই বলে রাখি, সব্জির মধ্যে সামান্য লবণ ও বেঁচে যাওয়া মেরিনেটের মসলার সাথে আরেকটু চিলি সস ও কয়েকটি কাঁচা মরিচ যোগ করেছিলাম। সব্জিটা একটু কড়া আঁচেই সঁতে করেছি।
ব্যাস! গরম গরম থাকতেই পাস্তা, ভেজিটেবল ও চিকেন খাবার জন্যে রেডি, কিন্তু আমরা যেহেতু আগে ফটোসেসন করি খাবারের, আমাদের তাই কিছুটা ঠান্ডাই টেস্ট করতে হয়েছে। আহা! ঠান্ডাটাই যদি এত্ত মজা হয়, তবে গরম গরম খেতে না জানি কেমন ছিল!
আপনাদের মতামত দিয়ে ভুলে যাবেন না যেন। আবারও নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হবো শিগগিরই।
আমাদের চিকেন নিয়ে লেখা অন্য পোস্টগুলিঃ
সরিষা-পুদিনা চিকেন ফয়েল বারবিকিউ
চিলি চিকেনের সাথে গাজর
বাঁটা পিঁয়াজে চিকেন ভুনা
স্টাফড চিকেন ব্রেস্ট, সাথে পনির ও পুদিনা
চিকেন সালাদ উইথ সামার ভেজি
চিলি-লাইম চিকেন
চিকেন স্ট্রিপ কাবাব
পেস্তো পাস্তার সাথে চিকেন বল
চমৎকার লাগছে। রান্না যে একটা শিল্প তা এখানে আবার প্রমান হয়ে গেল। আপনাদের জন্য শুভেচ্ছা। দেখে প্রান ভরে গেল। আসলে ইচ্ছা থাকলে, রান্না কত সুন্দর করা যায় তা আপনারা দেখিয়ে দিলেন।
ReplyDeleteআশা করি সামনে আরো মজাদার খাবার দেখতে পাব।
আমাদের নাম স্মরন করার জন্য আমরা ভীষন খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ।
উদরাজী ভাই, পুরো ক্রেডিট আপনার আর ভাবীর! আমরা তো আপনাদের রেসিপিটাই প্রধানতঃ ধার করেছি।
Deleteঅসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের দু'জনকে। :)