Monday 17 June 2013

লইট্ট্যা-টমেটোর মাখামাখি!!

১৭ জুন ২০১৩



যদি বলি বম্বে ডাক (Bombay Duck), তাহলে কি বুঝবেন? জ্বি না; আমরা কোন হাঁসের প্রজাতির কথা বলছি না। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে এটা একটা মাছের নাম! তবে আমরা আবার এই মাছকে লইট্ট্যা মাছ বলেই চিনি। সামুদ্রিক এই মাছ শুঁটকির জন্যেই নাম কুড়িয়েছে বেশি। সেই বৃটিশ আমলে যখন ওই অদ্ভুত ইংরেজী নামকরণ করা হয়েছিল, তখন থেকেই এর শুঁটকি বিখ্যাত। এই মাছের তরকারি রান্না খুব একটা সহজ নয়, কারণ এই মাছ খুব কম সময়েই পরিপূর্ণ রান্না হয়ে যায়; চূলার সামনে থেকে একটু সরলেই সমস্যা হয়ে যায়। আর মাছটা বেশ নরম প্রকৃতির; তাই উল্টাতে গেলেও ভেংগে গুঁড়া গুঁড়া হয়ে যাবে খুব সহজেই। আবার এই মাছ কখোনোই লবণ দিয়ে ধু'তে হয়না; কারণ লবণ দিলেই মাছটা শক্ত হয়ে যায়! এই ব্যাপারগুলি জানা ছিল মা'র (শরীফুন নাহার) বদৌলতে। ঠিক ধরেছেন; এবারও মাদার'স রেসিপি দিতে যাচ্ছি আমরা।









মাছগুলি খুব বড় আকৃতির ছিল না; মিডিয়াম আকারের থাকায় দুই টুকরা করেছি। প্রায় ১২ টুকরার মত মাছ শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখলাম। যেহেতু তরকারিটি মাখামাখা হবে, তাই পিঁয়াজের মিহি কীমা ব্যবহার করেছি। তেলে পিঁয়াজ কীমা হাল্কা বাদামী বর্ণ হবার পরে তাতে মিডিয়াম আকারের দু'টি টমেটো কুঁচি করে দিয়েছি। পিঁয়াজ ও টমেটোর ভুনা তাড়াতাড়ি হবার জন্য সামান্য লবণ দিয়েছি। লবণের ব্যাপারে একটু সতর্ক হতে হয়েছে, কারণ এটি একটি সামুদ্রিক মাছ; এর মধ্যে প্রাকৃতিকভাবেই লবণ থাকে। পিঁয়াজ ও টমেটোর কীমা মাখামাখা হয়ে যাবার পর তাতে সামান্য হলুদ গুঁড়া ও শুকনা মরিচ গুঁড়া দিয়ে ভালোভাবে ভুনা করে নিয়েছি। মসলাটা যেন শুকিয়ে না যায় তার জন্য সামান্য পানি দিয়েছি।







এখন মসলার মধ্যে মাছগুলিকে সাবধানে বিছিয়ে দিই। মোটামুটি কড়া আঁচেই রান্নাটি সেরেছি কারণ লইট্ট্যা বেশ পানি ছাড়ে। মাছগুলি মাত্র একবার উল্টিয়েছি, কারণ শুরুতেই বলেছি লইট্ট্যা মাছ খুবই নরম; বেশী নাড়লে ভেঙ্গে যায়।সম্পূর্ণ রান্নাটি হতে মাত্র ৫-৭ মিনিট লেগেছে।

টমেটো যদি লইট্ট্যা মাছের খালাতো ভাই হয়, তবে ধনে পাতা হবে চাচাতো ভাই! এই দু'জন ছাড়া লইট্ট্যা মাছকে অন্ততঃ আমরা ভাবতে পারি না! গরম ভাতের সাথে সার্ভ করলেই মজাটা টের পাওয়া যায়।

আপনাদের ফীডব্যাক দিতে ভুলে যাবেন না যেন। আপনারাই আমাদের অনুপ্রেরণা!

No comments:

Post a Comment