২৫ জানুয়ারী ২০১৪
কাবাবের (Kabab, Kebab, Kebob) কথা শুনলেই জিভে জল আসাটা খুব একটা অবাক হবার কিছু নয়। আমাদের দেশে মোটামুটি সবার কাছেই কাবাব জিনিসটা মুখরোচক একটা খাবার হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর অনেক দেশেই কাবাব কিন্তু মোটামুটি নিয়মিত একটা খাবারের আইটেমের মধ্যে পড়ে। মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়াতে কাবাবের সবচেয়ে বেশী প্রচলন থাকলেও এখন কাবাব পাওয়া যায় না এমন দেশ নেই। এটা সত্যিকার অর্থেই আন্তর্জাতিক একটা খাবারে পরিণত হয়েছে। তবে কাবাবের প্রকারভেদের ভিন্নতা আর প্রক্রিয়াগত ভিন্নতা রয়েছেই, আর থাকবেও। এক দেশের কাবাবের সাথে অন্য দেশের কাবাবের পার্থক্য অনেক। তবে সবচেয়ে বেশী প্রচলিত কাবাবের মধ্যে রয়েছে শিশ কাবাব (Shish Kebab) বা শিক কাবাব, যেখানে শিকের মধ্যে গোশত ঢুকিয়ে চূলার উপরে রেখে দেওয়া হয়। অনেক ধরনের গোশত বা মাছের শিশ কাবাব হলেও আমরা আজকে শুধু গরুর মাংস বা বীফের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো। আবারো একটা ধোঁয়া তোলা রেসিপি। আমাদের এই রেসিপি অনেকের সাথেই মিলবে না সেটাই স্বাভাবিক। সব রেসিপি একই রকম হলে তো আর রেসিপি দেওয়ার দরকারই পড়ছে না। যাই হোক, চলুন, চলে যাই রেসিপির ভেতরে।
কাবাবের স্বাদটা প্রধানত নির্ভর করে কাবাব মসলার উপরে। আর তাই এই মসলার ব্যবহারের উপরেই কাবাবের স্বাদের তারতম্য হবে। অনেকেই কাবাব মসলা বাসাতেই তৈরি করে থাকেন। অনেক রান্নার বইয়েও সেই মসলা তৈরির রেসিপি পাওয়া যাবে। তবে আমরা সময় বাঁচানোর খাতিরে বলুন, আর আলসেমির জন্যেই বলুন, ব্যবহার করেছি বাজার থেকে আনা ভাল একটি ব্র্যান্ডের রেডিমেড কাবাব মসলা। আর রান্না করা হবে বারবিকিউ চূলা বা কাঠকয়লার চূলায়।
কাবাবের গোশতগুলিকে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা, ইঞ্চিখানেক চওড়া, এবং বেশ পাতলা করে টুকরা করে নিয়েছি। যেহেতু এটা গরুর মাংস, তাই মেরিনেশনটা খুব জরুরি। কারণ গরুর গোশতের ক্ষেত্রে মেরিনেশনে সময় না দিলে গোশতের ভেতরে মসলা ঠিকমতো ঢুকবে না। সময় বেশী থাকলে একদিন আগে, আর সময় কম থাকলে অন্তঃত দু'ঘন্টা মেরিনেট করে রাখা দরকার। আমরা এক রাত মেরিনেট করে রেখেছিলাম।
মেরিনেশনের জন্য আমরা ব্যবহার করেছি খোসাসহ কাঁচা পেঁপে বাঁটা, টক দই, আদা-রসুন বাঁটা, কাবাব মসলা, শুকনা মরিচ গুঁড়া, লবণ, বেসন এবং সরিষার তেল (Mustard Oil)। সরিষার তেল ব্যবহার না করলেও চলে, তবে আমরা সরিষার তেলের ঝাঁঝটা পছন্দ করি বলেই সেদিকে একটু ঝুঁকে যাই। সব উপকরণগুলিকে মাংসের সাথে খুব ভালোমত মাখিয়ে মেরিনেট করে রেখে দিই।
এক রাতের মেরিনেশনের পর মাংসের টুকরাগুলিকে শিকে গেঁথে নিয়েছি।
বারবিকিউ চূলা বা কাঠকয়লার চূলা জ্বালিয়ে গরম হবার পরে তাতে শিকে গাঁথা মাংসগুলি দিয়ে দিই। মাঝে মাঝে কাবাবগুলির উপরে সরিষার তেল ব্রাশ করে দিয়েছি। শিকগুলিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কাবাবগুলিকে খাওয়ার উপযোগী সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত ঝলসে নিয়েছি। চূলার তাপের উপরে নির্ভর করবে রান্নার সময় কতক্ষন লাগতে পারে। তবে আমাদের সাজেশন থাকবে যে কষ্ট হলেও ধোঁয়া উপেক্ষা করে চূলার সামনে থাকুন। নাহলে কাবাব খুব সহজেই পুড়ে যেতে পারে।
ব্যাস হয়ে গেল আমাদের বীফ শিশ কাবাব। ধোঁয়ার মাঝ থেকে ম্যাজিকের মত উঠে আসলো কাবাব (ইয়ে মানে... রূপক অর্থে)! নান রুটি বা তন্দুরী রুটি বা গরম ভাত বা পোলাউ-এর সাথে খেতে দারুন মজা পাবেন আশা রাখি। স্মোকি ফ্লেভারটা অন্য যেকোন কিছু থেকে আলাদা, তাই মজাটাও আলাদা।
আপনাদের মতামত দিতে ভুলে যাবেন না যেন। আপনাদের মতামত আমাদের এগিয়ে যাবার প্রেরণা যোগায়। আশা করি আপনারা আমাদের সেই প্রেরণা দিয়ে যাবেন।
বীফ নিয়ে লেখা আমাদের অন্য পোস্টগুলিও দেখে নিতে পারেনঃ
বীফ প্যান পিজা
বীফ-ভেজিটেবল ফ্রাইড ওনটন
অল্প মসলায় বীফ চাপ
কাবাবের (Kabab, Kebab, Kebob) কথা শুনলেই জিভে জল আসাটা খুব একটা অবাক হবার কিছু নয়। আমাদের দেশে মোটামুটি সবার কাছেই কাবাব জিনিসটা মুখরোচক একটা খাবার হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর অনেক দেশেই কাবাব কিন্তু মোটামুটি নিয়মিত একটা খাবারের আইটেমের মধ্যে পড়ে। মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়াতে কাবাবের সবচেয়ে বেশী প্রচলন থাকলেও এখন কাবাব পাওয়া যায় না এমন দেশ নেই। এটা সত্যিকার অর্থেই আন্তর্জাতিক একটা খাবারে পরিণত হয়েছে। তবে কাবাবের প্রকারভেদের ভিন্নতা আর প্রক্রিয়াগত ভিন্নতা রয়েছেই, আর থাকবেও। এক দেশের কাবাবের সাথে অন্য দেশের কাবাবের পার্থক্য অনেক। তবে সবচেয়ে বেশী প্রচলিত কাবাবের মধ্যে রয়েছে শিশ কাবাব (Shish Kebab) বা শিক কাবাব, যেখানে শিকের মধ্যে গোশত ঢুকিয়ে চূলার উপরে রেখে দেওয়া হয়। অনেক ধরনের গোশত বা মাছের শিশ কাবাব হলেও আমরা আজকে শুধু গরুর মাংস বা বীফের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো। আবারো একটা ধোঁয়া তোলা রেসিপি। আমাদের এই রেসিপি অনেকের সাথেই মিলবে না সেটাই স্বাভাবিক। সব রেসিপি একই রকম হলে তো আর রেসিপি দেওয়ার দরকারই পড়ছে না। যাই হোক, চলুন, চলে যাই রেসিপির ভেতরে।
কাবাবের স্বাদটা প্রধানত নির্ভর করে কাবাব মসলার উপরে। আর তাই এই মসলার ব্যবহারের উপরেই কাবাবের স্বাদের তারতম্য হবে। অনেকেই কাবাব মসলা বাসাতেই তৈরি করে থাকেন। অনেক রান্নার বইয়েও সেই মসলা তৈরির রেসিপি পাওয়া যাবে। তবে আমরা সময় বাঁচানোর খাতিরে বলুন, আর আলসেমির জন্যেই বলুন, ব্যবহার করেছি বাজার থেকে আনা ভাল একটি ব্র্যান্ডের রেডিমেড কাবাব মসলা। আর রান্না করা হবে বারবিকিউ চূলা বা কাঠকয়লার চূলায়।
কাবাবের গোশতগুলিকে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা, ইঞ্চিখানেক চওড়া, এবং বেশ পাতলা করে টুকরা করে নিয়েছি। যেহেতু এটা গরুর মাংস, তাই মেরিনেশনটা খুব জরুরি। কারণ গরুর গোশতের ক্ষেত্রে মেরিনেশনে সময় না দিলে গোশতের ভেতরে মসলা ঠিকমতো ঢুকবে না। সময় বেশী থাকলে একদিন আগে, আর সময় কম থাকলে অন্তঃত দু'ঘন্টা মেরিনেট করে রাখা দরকার। আমরা এক রাত মেরিনেট করে রেখেছিলাম।
মেরিনেশনের জন্য আমরা ব্যবহার করেছি খোসাসহ কাঁচা পেঁপে বাঁটা, টক দই, আদা-রসুন বাঁটা, কাবাব মসলা, শুকনা মরিচ গুঁড়া, লবণ, বেসন এবং সরিষার তেল (Mustard Oil)। সরিষার তেল ব্যবহার না করলেও চলে, তবে আমরা সরিষার তেলের ঝাঁঝটা পছন্দ করি বলেই সেদিকে একটু ঝুঁকে যাই। সব উপকরণগুলিকে মাংসের সাথে খুব ভালোমত মাখিয়ে মেরিনেট করে রেখে দিই।
এক রাতের মেরিনেশনের পর মাংসের টুকরাগুলিকে শিকে গেঁথে নিয়েছি।
বারবিকিউ চূলা বা কাঠকয়লার চূলা জ্বালিয়ে গরম হবার পরে তাতে শিকে গাঁথা মাংসগুলি দিয়ে দিই। মাঝে মাঝে কাবাবগুলির উপরে সরিষার তেল ব্রাশ করে দিয়েছি। শিকগুলিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কাবাবগুলিকে খাওয়ার উপযোগী সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত ঝলসে নিয়েছি। চূলার তাপের উপরে নির্ভর করবে রান্নার সময় কতক্ষন লাগতে পারে। তবে আমাদের সাজেশন থাকবে যে কষ্ট হলেও ধোঁয়া উপেক্ষা করে চূলার সামনে থাকুন। নাহলে কাবাব খুব সহজেই পুড়ে যেতে পারে।
ব্যাস হয়ে গেল আমাদের বীফ শিশ কাবাব। ধোঁয়ার মাঝ থেকে ম্যাজিকের মত উঠে আসলো কাবাব (ইয়ে মানে... রূপক অর্থে)! নান রুটি বা তন্দুরী রুটি বা গরম ভাত বা পোলাউ-এর সাথে খেতে দারুন মজা পাবেন আশা রাখি। স্মোকি ফ্লেভারটা অন্য যেকোন কিছু থেকে আলাদা, তাই মজাটাও আলাদা।
আপনাদের মতামত দিতে ভুলে যাবেন না যেন। আপনাদের মতামত আমাদের এগিয়ে যাবার প্রেরণা যোগায়। আশা করি আপনারা আমাদের সেই প্রেরণা দিয়ে যাবেন।
বীফ নিয়ে লেখা আমাদের অন্য পোস্টগুলিও দেখে নিতে পারেনঃ
বীফ প্যান পিজা
বীফ-ভেজিটেবল ফ্রাইড ওনটন
অল্প মসলায় বীফ চাপ
খুবই সুন্দর ভাবে স্টেপ বাই স্টেপ দেয়া রেসিপি। অনেক ধন্যবাদ। তবে একটা কথা, যারা নতুন রাঁধুনি, তাদের জন্য বিশেষ করে রান্নার পরিমাপটা জানা খুবই জরুরি। তাই রেসিপিগুলোর সাথে পরিমাপটা দিলে খুবই উপকৃত হবো। ধন্যবাদ!
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটা কমেন্টের জন্যে।
Deleteআসলে নিজেরাই রান্না শেখার সময়ে খুব একটা পরিমাণ ধরে শিখেছি তা কিন্তু নয়। মোটামুটি আন্দাজের উপরেই রান্না করে শেখা। আর স্বাদের ক্ষেত্রে একেক জনের চাহিদা একেক রকম; যেমন একই রান্নায় কেউ একটা উপকরণের বদলে আরেক উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন, অথবা কোন উপকরণ একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে পারেন; তাতে রান্না খারাপ হবে তা কিন্তু নয়; শুধু স্বাদটা একটু অন্য রকম হবে। উদাহরণস্বরূপ, যে রান্নায় লেবুর রসের বদলে ভিনেগার দেওয়া যেতে পারে, সেখানে দু'টার পরিমাণে কিছুটা পার্থক্য হবে।
তবে আমরা পরবর্তীতে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করবো।
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ!