Thursday, 4 April 2013

দেশীয় খাবারের পসার - ৩ (আমিষের বলিহারি)

০৪ এপ্রিল ২০১৩

যারা এর আগের দু'টা ব্লগ পোস্ট পড়েছেন, তারা হয়তো জানবেন যে আমরা ১১টা দেশীয় খাবারের পসারের উপরে লিখছিলাম। ভর্তার সমাহার আর ডালের ডলাডলি পেরিয়ে আমরা এখন পৌঁছেছি আমিষের ঘরে। অনেকদিন লেগে গেল অবশ্য। তবে কিছু জিনিসের জন্য অপেক্ষা করা যায়। আশা করছি এটাও অপেক্ষা করার মতই বিষয়। সত্যি বলছি বেশি বলিনি! খাবারগুলি দেখতে যেমন ইয়ামি, খেতে কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি! এখনো মুখে লেগে আছে! যাই হোক আসল কথায় চলে যাচ্ছি...



শোল মাছে মটরশুঁটি...

একেকজনের রান্নার পদ্ধতি একেকরকম। এখানে শোল মাছটাকে (Snakehead Murrel) প্রথমে লবণ, হলুদ গুঁড়া, আর মরিচ গুঁড়া দিয়ে মাখিয়ে শ্যালো ফ্রাই করা হয়েছে। আর মসলা কষানোর পদ্ধতি সেই একই। তবে তেলে একটু পাঁচ ফোড়নের ফোড়ন দিলে একটি সুস্বাদের সাথে সুঘ্রাণও পাওয়া যায়। আর পিঁয়াজ কুঁচির চেয়ে পিঁয়াজ বাঁটা দিলে গ্রেভিটা ভালো হয়। হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, আর সামান্য আদা-রসুন বাঁটা দিয়ে কষানোর পর তাতে মটরশুঁটি দিয়ে দেয়ার পর ভাজা মাছগুলি ভালোমত কষানো মসলার উপরে বিছিয়ে একটু পানি দিয়ে ঢেঁকে রাখলে মাছগুলি রান্নাও হয় তাড়াতাড়ি, আর পাঁচ ফোড়নের গন্ধটা মাছের গায়ে ভালোভাবে মিশে যায়। মিনিট দশেক পর ঢাকনা উঠালেই সুগন্ধ আর পারফেক্ট গ্রেভি সহ শোল মাছে মটরশুঁটি তৈরি।




মুরগী আর ছোট আলুর ঝোল...

পুনরায়, মুরগীর মাংসের রেসিপি বলে আমি গালমন্দ খেতে চাই না। খালি মসলা কষানোর পর তাতে ছোট গোল আলু দিয়ে পাঁচ মিনিট কষানোর পর এখানে মুরগীর মাংস দেয়া হয়। মুরগীর মাংস পুরোপুরি রান্না হয়ে যাবার পর তার উপর ক্যাপসিকাম দিলে খাবার জন্য প্রস্তুত।



গরুর ভুঁড়ি ভুনা...

জানি, কিছু মানুষ নাক সিটকাচ্ছেন; আর কিছু মানুষের মুখ দিয়ে লোল পড়বে। নামটা যতই বিটকেলে হোক না কেন, স্বাদ কিন্তু একদম ফার্স্ট ক্লাস। গরুর মাংসের মতই প্রথমে সব মসলা, মানে পিঁয়াজ কুঁচি, আদা-রসুন বাঁটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, আস্ত গরম মসলা, তেল ও লবণ দিয়ে আগে থেকে সিদ্ধ করা গরুর ভুঁড়ির ছোট ছোট টুকরা ভালোমত মাখিয়ে চূলায় কষানো হয়। অনেকক্ষন কষানোর পর তাতে ছোট দু'টা আলু কিউব করে কেটে গরুর ভুঁড়ির সাথে আরও ভালোমত কষানোর পর যখন আলুটা সিদ্ধ হয়ে যায়, তখন আরেকটা কড়াইয়ে তেলের মধ্যে পিঁয়াজ কুঁচি দিয়ে পিঁয়াজটা বাদামী বর্ণ ধারণ করলে তাতে কষানো গরুর ভুঁড়িটা দিয়ে ভালোমত নাড়ানো মধ্যেই রান্না সম্পন্ন হয়ে যায়। খেয়াল রাখতে হবে এই ভুঁড়ি রান্নায় প্রধান মসলাই হবে গরম মসলা।

আর এই সাথেই শেষ হলো আমাদের দেশীয় খাবারের পসারের তিন পর্বের ব্লগ পোস্ট। এর পরে আবার হাজির হব অন্য কোন ইয়ামি খাবারের উপরে লেখা আর ছবি নিয়ে।

আপনাদের মতামত দিতে ভুলে যাবেন না। আপনারাই আমাদের সামনে এগুনোর শক্তি।

আমাদের দেশীয় খাবার সিরিজের বাকি পোস্টগুলিও দেখুনঃ
ভর্তার সমাহার
ডালের ডলাডলি

No comments:

Post a Comment