১৩ মার্চ ২০১৩
ক'দিন আগে আমরা আমাদের ফেইসবুক পেইজে দেশী খাবারের পসারের একটি ছবি দিয়েছিলাম (উপরের ছবিটি), যেখানে ১১টি দেশীয় খাবারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যেই ধৈর্য আপনাদের ধরতে বলেছিলাম সেই ছবির পরে সেই ধৈর্যের আজ অবসান হলো। এতে কতটা শান্তি দিতে পারছি জানি না, যদিও এই খাবারগুলো দেখে অথবা এর তৈরির পদ্ধতি দেখে মনে হতে পারে যে একমাত্র পেট-পূজার পরই মনের পরিপূর্ণ শান্তি অর্জিন সম্ভব। আমরাও অবশ্য অনেক কষ্ট করে ছবিগুলা তুলেছি। বুঝতেই পারছেন; এমন সব খাবার চোখের সামনে কতক্ষন রাখা সম্ভব?
যাই হোক, আসল কথায় আসি। আমরা প্রায় সবগুলি পদের রান্নারই পূর্ণ বর্ণনা দেব। এক খন্ডে দেওয়া না গেলেও কয়েক খন্ডে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করবো। সেদিনের মূলত সব খাবারই ছিল দেশীয়। আর দেশীয় খাবারের আয়োজনে ভর্তা থাকবে না, তা তো হয় না। এই খন্ডে আমরা পাঁচ পদের ভর্তার কথা বলবো, যা শুধু খেতেই সুস্বাদু ছিল না, দেখতেও ছিল বেশ মনোহর এবং পুষ্টিগুনেও পিছিয়ে ছিল না।
বেগুন ভর্তা...
প্রথমে বলি নামে গুণহীন, কিন্তু স্বাদ ও পুষ্টিতে ভরপুর বেগুন ভর্তার কথা। এমন কোন বাঙ্গালী নারী নেই যিনি বেগুন ভর্তা করতে জানেন না। বেগুনকে মাঝখান থেকে ফেঁড়ে নিয়ে তাতে রসুন ও কাঁচামরিচ ঢুকিয়ে চুলায় অল্প আঁচে ভালোমতো পুড়িয়ে নিলেই বেগুন ভর্তার আসল কাজই হয়ে যায়। এখন শুধু পিয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, সর্ষের তেল আর লবন... কতই না সহজ বেগুন ভর্তা।
টমেটো ভর্তা...
টমেটো সবসময় শুধু সালাদ বা সবজি হিসাবেই খাওয়া হয়। ভর্তার কথা খুব বেশী শোনা যায় না। কিন্তু মাদার্স রেসিপি বলে একটা কথা আছে। ননস্টিক প্যানে যখন আস্ত টমেটোগুলোকে দেখলাম, তখন বুঝলাম নতুন রেসিপি আসছে। টমেটোগুলো ঠান্ডা হবার পর এর চামড়াগুলো ফেলে ভালোমতো চটকিয়ে তাতে পিয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি ও কাঁচামরিচ কুচি, আর সর্ষের তেল ও লবণ। প্রস্তুত করতে করতেই জিভে জল চলে আসে।
লাউশাক ভর্তা...
লাউশাক ভর্তাটা খাওয়ার পরে মনে হয়েছিল এই ভর্তা না খেয়ে মরলে হয়তো আবার ভূত হয়ে ফেরত আসতে হতো! রসুন ও কাঁচামরিচ দিয়ে লাউশাক সিদ্ধ করে বাঁটা হয়েছে। কিন্তু স্বাদ বলছে অন্য কথা। সাথে আরও কিছু ছিল। আর সেটাই মিস্ট্রি! আম্মু বলতে চাচ্ছে না...... আপনারা চিন্তা করতে পারেন কি? কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বললাম কালিজিরা দিয়েছো সেটা বলছো না কেন? তখন আম্মু হেঁসে বললেন, 'তুই রাঁধতে শিখেছিস!'
ছিম ভর্তা...
ছিম ভর্তাটাও অন্যরকম। ছিম ভর্তা তো কখনো এত পিচ্ছিল হয় না। কারন কি? কারন তার সাথে আঠালো আলু সিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই স্বাদটাও ভিন্ন। পেঁয়াজের আর খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁজের সাথে যুক্ত হয়েছে কাঁচামরিচের তেজ।
ডাটাশাক ভর্তা...
ডাটাশাক সবসময় রান্না করে খেয়েছি... কিন্তু ভর্তা? এ-ই প্রথম। অনেকটা শাক রান্নার মতই, তবে তেল ছাড়া শুধু লবণ আর রসুন দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হয়েছে। তারপর হাতের কারসাজি - মানে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আর সর্ষের তেল দিয়ে চটকানো।
পরিমাপমত খেতে চাইলেও উপরের এতোগুলো ভর্তা দিয়ে খেতে চাইলে দু'প্লেট ভাত তো লাগেই! :D
এখনো অনেক মেনু কিন্তু বাকি রয়ে গেল! সেটা না হয় আরেকদিনের জন্য রেখে দিলাম। আমাদের সঙ্গে থাকুন...
আমাদের দেশীয় খাবারের সিরিজের বাকি পোস্টগুলিও দেখুনঃ
ডালের ডলাডলি
আমিষের বলিহারি
ক'দিন আগে আমরা আমাদের ফেইসবুক পেইজে দেশী খাবারের পসারের একটি ছবি দিয়েছিলাম (উপরের ছবিটি), যেখানে ১১টি দেশীয় খাবারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যেই ধৈর্য আপনাদের ধরতে বলেছিলাম সেই ছবির পরে সেই ধৈর্যের আজ অবসান হলো। এতে কতটা শান্তি দিতে পারছি জানি না, যদিও এই খাবারগুলো দেখে অথবা এর তৈরির পদ্ধতি দেখে মনে হতে পারে যে একমাত্র পেট-পূজার পরই মনের পরিপূর্ণ শান্তি অর্জিন সম্ভব। আমরাও অবশ্য অনেক কষ্ট করে ছবিগুলা তুলেছি। বুঝতেই পারছেন; এমন সব খাবার চোখের সামনে কতক্ষন রাখা সম্ভব?
যাই হোক, আসল কথায় আসি। আমরা প্রায় সবগুলি পদের রান্নারই পূর্ণ বর্ণনা দেব। এক খন্ডে দেওয়া না গেলেও কয়েক খন্ডে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করবো। সেদিনের মূলত সব খাবারই ছিল দেশীয়। আর দেশীয় খাবারের আয়োজনে ভর্তা থাকবে না, তা তো হয় না। এই খন্ডে আমরা পাঁচ পদের ভর্তার কথা বলবো, যা শুধু খেতেই সুস্বাদু ছিল না, দেখতেও ছিল বেশ মনোহর এবং পুষ্টিগুনেও পিছিয়ে ছিল না।
বেগুন ভর্তা...
প্রথমে বলি নামে গুণহীন, কিন্তু স্বাদ ও পুষ্টিতে ভরপুর বেগুন ভর্তার কথা। এমন কোন বাঙ্গালী নারী নেই যিনি বেগুন ভর্তা করতে জানেন না। বেগুনকে মাঝখান থেকে ফেঁড়ে নিয়ে তাতে রসুন ও কাঁচামরিচ ঢুকিয়ে চুলায় অল্প আঁচে ভালোমতো পুড়িয়ে নিলেই বেগুন ভর্তার আসল কাজই হয়ে যায়। এখন শুধু পিয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, সর্ষের তেল আর লবন... কতই না সহজ বেগুন ভর্তা।
টমেটো ভর্তা...
টমেটো সবসময় শুধু সালাদ বা সবজি হিসাবেই খাওয়া হয়। ভর্তার কথা খুব বেশী শোনা যায় না। কিন্তু মাদার্স রেসিপি বলে একটা কথা আছে। ননস্টিক প্যানে যখন আস্ত টমেটোগুলোকে দেখলাম, তখন বুঝলাম নতুন রেসিপি আসছে। টমেটোগুলো ঠান্ডা হবার পর এর চামড়াগুলো ফেলে ভালোমতো চটকিয়ে তাতে পিয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি ও কাঁচামরিচ কুচি, আর সর্ষের তেল ও লবণ। প্রস্তুত করতে করতেই জিভে জল চলে আসে।
লাউশাক ভর্তা...
লাউশাক ভর্তাটা খাওয়ার পরে মনে হয়েছিল এই ভর্তা না খেয়ে মরলে হয়তো আবার ভূত হয়ে ফেরত আসতে হতো! রসুন ও কাঁচামরিচ দিয়ে লাউশাক সিদ্ধ করে বাঁটা হয়েছে। কিন্তু স্বাদ বলছে অন্য কথা। সাথে আরও কিছু ছিল। আর সেটাই মিস্ট্রি! আম্মু বলতে চাচ্ছে না...... আপনারা চিন্তা করতে পারেন কি? কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বললাম কালিজিরা দিয়েছো সেটা বলছো না কেন? তখন আম্মু হেঁসে বললেন, 'তুই রাঁধতে শিখেছিস!'
ছিম ভর্তা...
ছিম ভর্তাটাও অন্যরকম। ছিম ভর্তা তো কখনো এত পিচ্ছিল হয় না। কারন কি? কারন তার সাথে আঠালো আলু সিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই স্বাদটাও ভিন্ন। পেঁয়াজের আর খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁজের সাথে যুক্ত হয়েছে কাঁচামরিচের তেজ।
ডাটাশাক ভর্তা...
ডাটাশাক সবসময় রান্না করে খেয়েছি... কিন্তু ভর্তা? এ-ই প্রথম। অনেকটা শাক রান্নার মতই, তবে তেল ছাড়া শুধু লবণ আর রসুন দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হয়েছে। তারপর হাতের কারসাজি - মানে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আর সর্ষের তেল দিয়ে চটকানো।
পরিমাপমত খেতে চাইলেও উপরের এতোগুলো ভর্তা দিয়ে খেতে চাইলে দু'প্লেট ভাত তো লাগেই! :D
এখনো অনেক মেনু কিন্তু বাকি রয়ে গেল! সেটা না হয় আরেকদিনের জন্য রেখে দিলাম। আমাদের সঙ্গে থাকুন...
আমাদের দেশীয় খাবারের সিরিজের বাকি পোস্টগুলিও দেখুনঃ
ডালের ডলাডলি
আমিষের বলিহারি
মাইরা লা আম্রে মাইরা লা
ReplyDeleteআরে কি বলেন, এইটা তো পার্ট ওয়ান... আরও আছে তো...
Deleteক্ষুধার উদ্রেক হচ্ছে সকাল সকাল... ...জীবে জল তো ঠেকানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে... ...
ReplyDeleteএকটু কষ্ট করে ধরে রাখুন... সব জল একবারে ফেলে দিতে নেই...
Deleteপোলাও-কোরমা'র চে ভর্তা দিয়ে যে কত তৃপ্তি নিয়ে খাওয়া যায়... আফটার অল আমরা বাঙালি তো! :)
ReplyDeleteএক আন্টি কে চিনি, উনি ভর্তা নিয়ে রীতিমতো এক্সপেরিমেন্ট করেন! উনার বাসায় আমি প্রথম নারকেল-এর ভর্তা খেয়েছিলাম... আর কাউকে দেখিনি নারকেলের ভর্তা বানাতে...
আশা করছি এখানেও মজার মজার আরো ভর্তার রেসিপি পাবো। :)
খুব সুন্দর করে বলেছেন... বাঙ্গালীর খাবার ভর্তা ছাড়া হবে কি করে?
Deleteআর নারকেলের ভর্তা? এটা সত্যিই আলাদা হবে শিওর... এক্সপার্ট না হলে কেউ আলাদা রান্না করেন না... ভর্তার রেসিপি আরো থাকবে অবশ্যই... :)
Ahhhhaa...bhorta dekhlei mon bhore jai...nice post Sharif bhai :)
ReplyDeleteধন্যবাদ! ভর্তা আমাদের সবারই প্রিয়। বাঙ্গালী খাবারে ভর্তা না হলে আসলে কি যেন একটা বাকি থেকে যায়... :)
Deletejotil.....kothin......vorta to amader khubi fav....2/1 din porpor e amra vorta khai....r majhe majhe ekdin er menu te thakey shudhui vorta....asha korchi kichu unique vorta ekhan thekey shikhtey parbo...carry on bro... :-)
ReplyDeleteধন্যবাদ... শুধু ভর্তা না, আরও অনেক কিছু থাকবে আমাদের পরিবেশনায়... আমাদের সাথে থাকবেন আশা করি... :)
Delete