Wednesday 6 March 2013

দেশী-বিদেশী ফিউসন...

০৬ মার্চ ২০১৩


পহেলা মার্চ। মা'র জন্মদিন। একটা বাহানা পেয়ে আমরা ঠিক করেই বসলাম আজকে আলাদা কিছু খাবো। বাইরে থেকে কিনেও খাওয়া-দাওয়া করা যেত, তবে সেটাতে আত্মার তৃপ্তিতে কিছুটা ঘাটতি হতে পারতো। তাই ঠিক করলাম কিছু কষ্ট করলে ক্ষতি হয়ে যাবে না তেমন। রান্না তো প্রতিদিন করাই হচ্ছে। আর এমনিতেও প্রতি জন্মদিনেই বাসায় কিছু কিছু করার চেষ্টা থাকেই। যাই হোক আলাদা কিছু করবো মনে হতেই আলাদা কিছু রেসিপির কথা মনে পড়লো যা মা পছন্দ করবেন।

তবে অন্য রকম কিছু যেন হয়, সেদিকেও খেয়াল ছিল। বিশেষ করে স্টাইলিং-এর ক্ষেত্রে একটা দেশী-বিদেশী ফিউসন আনার চেষ্টা করলাম। ছবি তোলার একটা পরিকল্পনা ছিল প্রথম থেকেই। কাজেই সেটা মাথায় নিয়েই এগুচ্ছিলাম। খাবার টেবিলে রাখার পরে খুব বেশী সময় ছবি তোলার উপযোগী থাকে না। কাজেই লাইট-ক্যামেরা-স্ট্যান্ড ইত্যাদি রেডি করেই তবে খাবার একটা একটা করে আনা শুরু হলো।



যাই হোক, টেবিলের প্রিপারেশনের কথা হলো অনেক। এখন রান্নাঘরের প্রিপারেশনের কথায় আসা যাক। দুই ঘন্টায় চাকু, খুন্তি এবং হাঁড়ির যৌথ প্রযোজনায় খাবার হলো প্রস্তুত। প্রথম ধাপে তৈরি হলো ভেজিটেবল স্যুপ উইথ মাসরুম এন্ড ব্রকলি (Vegetable Soup with Mushroom and Broccoli) এবং চিকেন উইংস উইথ গারলিক-চিলি সস (Chicken Wings with Garlic and Chili Sauce)। কথায় আছে আগে দর্শনধারী তারপর গুন বিচারী। দর্শন ভালো হওয়ায় খেতে খারাপ লাগল না। আদা-রসুন বাটা, ওইস্টার সস, শুকনা মরিচ গুড়া, লবন আর চিনি দিয়ে আগের দিন মেরিনেট করায় চিকেন উইংস ভাজতে বেশী সময় লাগল না। চিকেন উইংসের উপর রসুন কুচি, টমেটো চিলি সস, ওইস্টার সস আর চিকেন স্টক দিয়ে একটা ইয়াম্মী সস বানিয়ে উপরে দিতেই তা দেখতে যেমন লোভনীয় হলো, খেতেও হলো তেমন সুস্বাদু। বেশ ভাল একটা সন্ধ্যার খাবার হয়ে গেল।



পরের ধাপের মেনু ছোট্ট, তবে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত। স্টার-ফ্রাই ভেজিটেবল আর চিকেন ফ্রাই (Stir-fry Vegetable and Chicken Fry)। কিন্তু বাঙ্গালী বলে তো কথা। কিছুটা শর্করা পেটে না পড়লে কি যেন বাকি রয়ে যায়। তাই সাথে ভেজিটেবল ফ্রাইড রাইস (Vegetable Fried Rice)। কড়াইয়ে সামান্য তেলের মধ্যে জুলিয়ান কাট গাজর, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, বাধাকপি, বেবিকর্ণ, ব্রকলি আর মাসরুম, পরিমাণমত লবণ আর গোলমরিচের গুঁড়া। ব্যাস। আর জুলিয়ান কাট কি, সেটা আজকের রাধুনীদের বলে দেয়া লাগে না। হয়ে গেল স্টার-ফ্রাই ভেজিটেবল। খেয়াল রাখতে হয়েছিল যেন সব্জিগুলোর রঙ নষ্ট না হয়। আর তার জন্য চুলার আগুনকে অনেক উচ্চতাপে জ্বলতে হয়েছে।



মুরগীটাও ছিল আগের রাতে আদা-রসুন বাঁটা, শুকনা মরিচ গুঁড়া, ওইস্টার সস, টমেটো কেচাপ, গোলমরিচ গুঁড়া, লবণ ও সামান্য চিনি দিয়ে মেরিনেট করা। তাই কর্ণফ্লাওয়ার ও ময়দার মিশ্রণে ভাজতে বেশী সময় লাগেনি। আর ফ্রাইড রাইস?... পোলাউয়ের চালের ভাত আর পছন্দমত সবজি তেলে ভেজে মিক্স করলেই তো হয়ে গেল ফ্রাইড রাইস। খালি খেয়াল রাখতে হবে যাতে পোলাউয়ের চালের ভাতটা যেন থাকে একদম ঝরঝরে। তৈরি আমাদের রাতের ডিনার।

আমাদের পরিবেশনটা অবশ্য ছিল কিছুটা দেশীয় স্টাইলে। ওই যে বললাম, দেশী-বিদেশী ফিউসন। পাশ্চাত্য-স্টাইলের খাবার, কিন্তু দেশীয় হেঁসেল আর দেশীয় পরিবেশন পাত্র। কিছুটা আলাদা তো হলো। যাই হোক, খেতে কিন্তু বেশ ভালোই ছিল। তাহলে আজকের মত এখানেই শেষ। এরপরে হাজির হবো একেবারে দেশীয় খাবারের অভিজ্ঞতা নিয়ে।

2 comments:

  1. চমৎকার... যেমন খাবারের ছবি, তেমনি পরিবেশনের কেতা...সবকিছু একদম দুরস্ত! :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ!!... আপনিও কিন্তু কম যান না... :)

      Delete