১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
শীতের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে আসলেও বাজারে ফুলকপির কিন্তু কমতি নেই এখনো। কিছু কিছু ফুলকপির সাইজ দেখে সত্যিই বাহবা দিতে হয়। মা (নিলুফা কামাল) ফুলকপির একটা রেসিপি মোটামুটি রেগুলারই করে থাকেন। কিছুদিন ধরেই চিন্তা করে আসছিলাম যে সেই রেসিপিটা করে দেখবো। সেই সময় এসেছে শীতের শেষে এসেই। তাই এখন এই পোস্ট। মা'র হাতের যাদু আমাদের এই রেসিপির মাধ্যমে কিছুটা হলেও তুলে ধরার একটা প্রয়াস থাকবে। ফুলকপির রোস্ট আরও অনেক রন্ধনশিল্পীরাই করে থাকেন। তবে সেই রেসিপিগুলি খুব একটা সহজ বলে বলা যাবে না মনে হয়। আমরা সবসময় সহজ রেসিপি খুঁজি। তাই কঠিন রেসিপি দেখলে কিছুটা হাই-তোলা-মাথা-চুলকানো অবস্থার উদ্রেক হয়!
তবে এবারে ভালোই হয়েছে যে রেসিপির ফাঁকফোকড় খুঁজতে খুঁজতে মা'র এই রেসিপিটা পেয়ে গেলাম। এটা অন্যান্য ফুলকপির রোস্ট থেকে বেশ আলাদা, আর অপেক্ষাকৃত সহজ। আর স্বাদের কথা কি আর বলবো। প্রথমবার মা'র হাতের এই খাবারটা খেয়েই তো সম্মোহিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর থেকেই এই রেসিপিটা আমাদের রান্নাঘরে করার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলাম। যাই হোক, আজকের রেসিপি হলো ফুলকপির রোস্ট (Roasted Whole Cauliflower)। চলুন ঘুরে আসি রান্নাঘর থেকে।
ফুলকপির রোস্টটির রান্না দুই ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপটি হবে ফুলকপি সিদ্ধ করা; আর দ্বিতীয় ধাপটি হবে গ্রেভি-টা রান্না করা।
বাজার থেকে ফুলকপি কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, ফুলকপিটা যেন টাটকা থাকে। টাটকা না হলে ফুলকপির ফুলগুলি একত্রে থাকতে চাইবে না; আর তাহলে রেসিপির সবচেয়ে বড় সৌন্দর্যটাই হারিয়ে বসবে। ফুলকপির ডাল কেটে একটি বড় পাত্রে পর্যাপ্ত পানি নিয়ে (যাতে পানিতে ফুলকপিটা পুরোপুরি ডুবে যায়) তাতে এক থেকে দেড় চা চামচ পরিমাণ লবণ দিয়ে ঘন্টাখানেক ভিজিয়ে রাখি। লবণ পানিতে ফুলকপি ভিজিয়ে রাখার কারণ হচ্ছে ফুলকপির ভিতরে কোন পোকা-মাকড় থাকলে তা যেন বের হয়ে যায়।
এখন একটি বড় সস-প্যানে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ টমেটো সসের সাথে এক টেবিল চামচ ভিনেগার, আদা-রসুন বাঁটা, মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিই।
এরপর হাঁড়িটিকে চূলায় বসিয়ে ঐ সসের মিশ্রণের উপর ফুলকপির ফুলের দিকের সাইডটা উপুড় করে বসিয়ে দিই। মিনিট দু'য়েকের জন্যে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিই।
মিনিট দু'য়েক পরে ঢাকনা সরিয়ে ফুলকপিটি সাবধানে উলটে দিই। এবার ফুলকপির গোড়ার দিকটা হাঁড়ির উপরে বসবে। চূলা থাকবে মিডিয়াম আঁচে। এক্ষেত্রে আর ঢাকনা দিচ্ছি না। ঢাকনা দিলে ফুলকপি থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়বে, যার ফলে ফুলকপিটি নরম হয়ে যাবে।
ওই মিডিয়াম আঁচেই পানিটা পুরোপুরি টেনে নেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে চূলা বন্ধ করে সিদ্ধ ফুলকপিটি রেখে দিই।
এবার হচ্ছে গ্রেভি তৈরির পালা। আমরা এখানে পিঁয়াজ কুঁচির পরিবর্তে পিঁয়াজ বাঁটা ব্যবহার করছি যাতে গ্রেভি-টা বেশ মশৃণ ও মিহি হয়। খাবার তেলের সাথে আমরা কিছুটা ঘি-ও ব্যবহার করেছি। আমরা রাইস ব্র্যান আয়েল ব্যবহার করেছি; আপনি যেকোন তেল ব্যবহার করতে পারেন। আর ঘি ব্যবহার করেছি একটা সুন্দর গন্ধ পাবার জন্য।
কড়াইতে তেল গরম হলে তার সাথে কয়েক চামচ ঘি দিই। এরপর এতে দিই পিঁয়াজ বাঁটা, পোস্ত বাঁটা (Poppy Seeds Paste), আদা-রসুন বাঁটা, শুকনা মরিচ গুঁড়া, লবণ, গরম মসলা গুঁড়া ও সামান্য চিনি। মসলা কষানোর সময় প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দিতে হবে। গ্রেভি-টা আমরা কতটুকু ঘন চাচ্ছি, সেটার উপরে নির্ভর করবে পানির পরিমাণ।
গ্রেভির মসলা ভালোমত কষানো হয়ে যাবার পরে কিছু মসলা আলাদা বাটিতে তুলে রাখি। গরম অবস্থাতেই এই মসলার সাথে আরও একটু ঘি দিই।
কষানো মসলার মধ্যে আগে থেকেই সিদ্ধ করে রাখা আস্ত ফুলকপিটি দিয়ে দিই। এরপর ফুলকপির উপরে ঘি-যুক্ত তুলে রাখা গ্রেভির মসলা ফুলকপির উপরে ভালোভাবে ছড়িয়ে দিই। এরপর চূলার আঁচ একেবারে ধিমা রেখে ঢাকনা দিয়ে রেখে দিই চার-পাঁচ মিনিটের জন্যে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকনা সরানো ঠিক হবে না, কারণ আমরা চাচ্ছিলাম ঘি-যুক্ত গ্রেভির মসলাটা যেন তার ফ্লেভারটা ধরে রাখতে পারে। ঠিক পরিবেশনের পূর্বেই ঢাকনা সরিয়ে নিলে সুঘ্রাণসহ গরম গরম সার্ভ করা যাবে।
হয়ে গেল আমাদের ফুলকপির রোস্ট (Roasted Whole Cauliflower)। এটা এমন একটা ডিস যা খাবার টেবিলের মধ্যমণি হবে। আগেও বলেছি যে ফুলকপির রোস্টের জন্যে এটাই একমাত্র রেসিপি নয়। অনেকে অনেকভাবে এটা তৈরি করে থাকেন। আমরা আমাদের মা'র রেসিপি অনুসরণ করেছি।
আপনাদের ফিডব্যাক দিতে ভুলে যাবেন না যেন। আপনারাই তো আমাদের অনুপ্রেরণা। আশা করি আমাদের এগিয়ে যাবার জন্যে অনুপ্রেরণা যোগাতে ভুলবেন না।
শীতের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে আসলেও বাজারে ফুলকপির কিন্তু কমতি নেই এখনো। কিছু কিছু ফুলকপির সাইজ দেখে সত্যিই বাহবা দিতে হয়। মা (নিলুফা কামাল) ফুলকপির একটা রেসিপি মোটামুটি রেগুলারই করে থাকেন। কিছুদিন ধরেই চিন্তা করে আসছিলাম যে সেই রেসিপিটা করে দেখবো। সেই সময় এসেছে শীতের শেষে এসেই। তাই এখন এই পোস্ট। মা'র হাতের যাদু আমাদের এই রেসিপির মাধ্যমে কিছুটা হলেও তুলে ধরার একটা প্রয়াস থাকবে। ফুলকপির রোস্ট আরও অনেক রন্ধনশিল্পীরাই করে থাকেন। তবে সেই রেসিপিগুলি খুব একটা সহজ বলে বলা যাবে না মনে হয়। আমরা সবসময় সহজ রেসিপি খুঁজি। তাই কঠিন রেসিপি দেখলে কিছুটা হাই-তোলা-মাথা-চুলকানো অবস্থার উদ্রেক হয়!
তবে এবারে ভালোই হয়েছে যে রেসিপির ফাঁকফোকড় খুঁজতে খুঁজতে মা'র এই রেসিপিটা পেয়ে গেলাম। এটা অন্যান্য ফুলকপির রোস্ট থেকে বেশ আলাদা, আর অপেক্ষাকৃত সহজ। আর স্বাদের কথা কি আর বলবো। প্রথমবার মা'র হাতের এই খাবারটা খেয়েই তো সম্মোহিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর থেকেই এই রেসিপিটা আমাদের রান্নাঘরে করার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলাম। যাই হোক, আজকের রেসিপি হলো ফুলকপির রোস্ট (Roasted Whole Cauliflower)। চলুন ঘুরে আসি রান্নাঘর থেকে।
ফুলকপির রোস্টটির রান্না দুই ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপটি হবে ফুলকপি সিদ্ধ করা; আর দ্বিতীয় ধাপটি হবে গ্রেভি-টা রান্না করা।
বাজার থেকে ফুলকপি কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, ফুলকপিটা যেন টাটকা থাকে। টাটকা না হলে ফুলকপির ফুলগুলি একত্রে থাকতে চাইবে না; আর তাহলে রেসিপির সবচেয়ে বড় সৌন্দর্যটাই হারিয়ে বসবে। ফুলকপির ডাল কেটে একটি বড় পাত্রে পর্যাপ্ত পানি নিয়ে (যাতে পানিতে ফুলকপিটা পুরোপুরি ডুবে যায়) তাতে এক থেকে দেড় চা চামচ পরিমাণ লবণ দিয়ে ঘন্টাখানেক ভিজিয়ে রাখি। লবণ পানিতে ফুলকপি ভিজিয়ে রাখার কারণ হচ্ছে ফুলকপির ভিতরে কোন পোকা-মাকড় থাকলে তা যেন বের হয়ে যায়।
এখন একটি বড় সস-প্যানে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ টমেটো সসের সাথে এক টেবিল চামচ ভিনেগার, আদা-রসুন বাঁটা, মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিই।
এরপর হাঁড়িটিকে চূলায় বসিয়ে ঐ সসের মিশ্রণের উপর ফুলকপির ফুলের দিকের সাইডটা উপুড় করে বসিয়ে দিই। মিনিট দু'য়েকের জন্যে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিই।
মিনিট দু'য়েক পরে ঢাকনা সরিয়ে ফুলকপিটি সাবধানে উলটে দিই। এবার ফুলকপির গোড়ার দিকটা হাঁড়ির উপরে বসবে। চূলা থাকবে মিডিয়াম আঁচে। এক্ষেত্রে আর ঢাকনা দিচ্ছি না। ঢাকনা দিলে ফুলকপি থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়বে, যার ফলে ফুলকপিটি নরম হয়ে যাবে।
ওই মিডিয়াম আঁচেই পানিটা পুরোপুরি টেনে নেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে চূলা বন্ধ করে সিদ্ধ ফুলকপিটি রেখে দিই।
এবার হচ্ছে গ্রেভি তৈরির পালা। আমরা এখানে পিঁয়াজ কুঁচির পরিবর্তে পিঁয়াজ বাঁটা ব্যবহার করছি যাতে গ্রেভি-টা বেশ মশৃণ ও মিহি হয়। খাবার তেলের সাথে আমরা কিছুটা ঘি-ও ব্যবহার করেছি। আমরা রাইস ব্র্যান আয়েল ব্যবহার করেছি; আপনি যেকোন তেল ব্যবহার করতে পারেন। আর ঘি ব্যবহার করেছি একটা সুন্দর গন্ধ পাবার জন্য।
কড়াইতে তেল গরম হলে তার সাথে কয়েক চামচ ঘি দিই। এরপর এতে দিই পিঁয়াজ বাঁটা, পোস্ত বাঁটা (Poppy Seeds Paste), আদা-রসুন বাঁটা, শুকনা মরিচ গুঁড়া, লবণ, গরম মসলা গুঁড়া ও সামান্য চিনি। মসলা কষানোর সময় প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দিতে হবে। গ্রেভি-টা আমরা কতটুকু ঘন চাচ্ছি, সেটার উপরে নির্ভর করবে পানির পরিমাণ।
গ্রেভির মসলা ভালোমত কষানো হয়ে যাবার পরে কিছু মসলা আলাদা বাটিতে তুলে রাখি। গরম অবস্থাতেই এই মসলার সাথে আরও একটু ঘি দিই।
কষানো মসলার মধ্যে আগে থেকেই সিদ্ধ করে রাখা আস্ত ফুলকপিটি দিয়ে দিই। এরপর ফুলকপির উপরে ঘি-যুক্ত তুলে রাখা গ্রেভির মসলা ফুলকপির উপরে ভালোভাবে ছড়িয়ে দিই। এরপর চূলার আঁচ একেবারে ধিমা রেখে ঢাকনা দিয়ে রেখে দিই চার-পাঁচ মিনিটের জন্যে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকনা সরানো ঠিক হবে না, কারণ আমরা চাচ্ছিলাম ঘি-যুক্ত গ্রেভির মসলাটা যেন তার ফ্লেভারটা ধরে রাখতে পারে। ঠিক পরিবেশনের পূর্বেই ঢাকনা সরিয়ে নিলে সুঘ্রাণসহ গরম গরম সার্ভ করা যাবে।
হয়ে গেল আমাদের ফুলকপির রোস্ট (Roasted Whole Cauliflower)। এটা এমন একটা ডিস যা খাবার টেবিলের মধ্যমণি হবে। আগেও বলেছি যে ফুলকপির রোস্টের জন্যে এটাই একমাত্র রেসিপি নয়। অনেকে অনেকভাবে এটা তৈরি করে থাকেন। আমরা আমাদের মা'র রেসিপি অনুসরণ করেছি।
আপনাদের ফিডব্যাক দিতে ভুলে যাবেন না যেন। আপনারাই তো আমাদের অনুপ্রেরণা। আশা করি আমাদের এগিয়ে যাবার জন্যে অনুপ্রেরণা যোগাতে ভুলবেন না।
Will definitely try.
ReplyDeleteIts definitely worth the try....
Deletebest of luck! :)
গতকাল try করলাম। স্বাধ ভালোই হয়েছিলা তবে ফুলকপি সিদ্ধ হতে একটু সময় বেশি সময় লেগেছিল। টমেটো সস এর সাথে কি পানি দিতে হবে?
Deleteআপনাদের এই প্রচেষ্টা কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুবই ভালো লাগলো শুনে যে আপনি ট্রাই করেছেন। আর অনেক ধন্যবাদ আপনার প্রচেষ্টার ফলাফল আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য!
Deleteটমেটো সসের সাথে পানি দেওয়ার প্রয়োজন পরে না। তবে টমেটো সস বেশি ঘন হলে তাতে খুব সামান্য (১/৪ কাপ) পানি দেওয়া যেতে পারে। বেশী পানি দেবার দরকার নেই, কারণ ফুলকপি প্রচুর পানি ছাড়ে। আর হ্যা, মধ্যম আঁচে ফুলকপি সিদ্ধ করলে ৪৫মিনিট থেকে ১ ঘন্টা সময় লেগে যেতে পারে।
আবারও ধন্যবাদ আপনাকে।
উমমম... ভাবীদের নতুন রেসিপি দিয়ে চমকে দিতে এইটা অতুলনীয়! থ্যাংকু! :-D
ReplyDeleteহা হা... এটা আসলেই চমকাবার মতোই একটা জিনিস!
Deleteআশা করি তৈরি করার পরে আমাদেরকে ফীডব্যাক জানাবেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে! :)