Monday, 10 March 2014

রং-এর আকর্ষণ অন্য রকম!!...... (সবজি লুচি)

১০ মার্চ ২০১৪

Food Photography, Dhaka, Bangladesh

ছোটবেলায় মা যখন লুচি খেতে দিতেন, তখন খেতে চাইতাম না। কিন্তু যখন সেই একই লুচি রঙ্গিন হয়ে সামনে দেখা দিত, তখন ঠিকই গপাগপ খেয়ে নিতাম। রং-এর আকর্ষণ এখানেই। শুধু ছোটরাই যে রং-এর প্রতি আকর্ষিত হয় তা কিন্তু নয়। বড়রাও রঙ্গিন জিনিস দেখলে সেটার দিকে হাত বাড়াতে চায়। আসলে দেখতে ভাল হওয়া একটা খাবারের পেট পর্যন্ত পৌঁছার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় বৈকি। আর এই সৌন্দর্যের একটা প্রধান দিক হচ্ছে রঙ। আমরা বড়-ছোট সবাই আসলে সৌন্দর্য-পিপাসু।

বিশ্ব নারী দিবসে আমাদের বাড়িতে ছোট-খাট একটা পার্টি হয়ে গেল। সেখানে প্রধান আকর্ষণ ছিল রঙ্গিন সেই লুচি। আমাদের বাড়ির ক্ষুদে নারীরা (লামিসা আর তাবাসসুম) বেশ মজা করেই সেই লুচি খেয়েছিল; আমরাও খেয়েছি। আজ সেই লুচি নিয়েই কথা বলবো।


Food Photography, Dhaka, Bangladesh

রঙ্গিন লুচি বলে মনে করবেন না যে সেখানে অকৃত্রিম কিছু ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকৃতিতে এত্ত এত রঙ থাকতে কৃত্রিম জিনিসের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার দরকার আছে কি? গাজর, পালংশাক আর বীট - এই তিন সবজি আমাদের তিন ধরণের রং-ই শুধু দেবে না, দেবে প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ একটা খাবার। আর এজন্যেই আমাদের এই লুচিকে আমরা বলছি সবজি লুচি (Vegetable Luchi)। বাড়ির ছোট্ট সদস্যরা এটাকে বলছে বেলুন লুচি।

আমরা সবগুলি সব্জিকেই বেঁটে নিয়েছি। বীটের রঙ আমাদের দেবে বেগুনী/মেরুন রঙ, গাজর দেবে হলুদাভ কমলা রঙ আর পালং শাক দেবে হাল্কা সবুজ রঙ।




হাফ কাপ আটার সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে তার সাথে গাজর বাঁটা দিয়ে কমলা রঙের ডো বানিয়ে নিয়েছি।






একইভাবে পালংশাক আর বীট দিয়েও আরও দু'টা  রঙ্গিন ডো বানিয়ে ফেললাম।





ডো-গুলিকে লম্বা আকৃতির (ছবির মতো) করে তৈরি করেছি। তারপরে তিনটি লম্বা ডো-কে একসাথে করে ছুরি দিয়ে কেটে নিয়েছি। এরপর হাতের উপরে এই তিন রঙের ডো-কে একত্র করে চ্যাপ্টা বানিয়ে নিয়েছি। গোলাকৃতির এই ডো-তে তিন রঙের সমাহার দেখা যাবে।



এখন তিন রঙের ডো-গুলিকে লুচির আকারে বেলে নিয়েছি।


বেলে নেওয়া লুচিগুলিকে গরম ডুবো তেলে (আমরা এখানে রাইস ব্র্যান অয়েল ব্যবহার করেছি; আপনি যেকোন তেল ব্যবহার করতে পারেন) ভেজে নিয়েছি। ব্যাস, হয়ে গেল আমাদের সবজি লুচি (Vegetable Luchi)। এখন শুধু গরম গরম পরিবেশন করা বাকি।

Food Photography, Dhaka, Bangladesh

আপনাদের মতামত দিতে ভুলে যাবেন আশা রাখি।

8 comments:

  1. Replies
    1. অনেক ধন্যবাদ!
      আশা করি ট্রাই করে দেখবেন। :)

      Delete
  2. এই চমৎকার রেসিপির জন্য অশেষ ধন্যবাদ... :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মতামত দিতে ভুলে না যাবার জন্য! :)

      Delete
  3. Replies
    1. তৈরি করে দেখুন, সবাই বলবে ওয়াও! :)

      Delete
  4. হয়েছে কি... এই লুচি তো ভাবী বানিয়েছিল আমাদের জন্য... এতদিন পরে সেটার রেসিপিসহ ছবি দেখে সেদিনের আড্ডার কথা খুব মনে পরছিলো... কিছুটা মন ও খারাপ লাগছিলো কতদিন সবাই কে দেখিনা ভেবে ... খাবারের সাথে মানুষের কত স্মৃতি ই না জড়ানো থাকে...সেসব স্মৃতি আসলে কখনো ভুলবার নয়। খাবার তো একটা ছুতো মাত্র, এই ছুতোয় কত কথা মনে পরে গেল। কিভাবে চোখ ভিজে উঠেছে নিজেও জানিনা...

    আসলে আমি দুঃখিত হঠাৎ এমন ইমোশনাল হয়ে যাওয়ার জন্য!

    ReplyDelete
    Replies
    1. দুঃখ পাবার কিছু নেই। আমরা কিছুদিন আগে ব্রেকফাস্ট নিয়ে একটা পোস্টে লিখেছিলাম খাবারের সাথে কিভাবে আমাদের স্মৃতি জড়িত থাকে। এই খাবারটা তৈরি করার সময় আপনাদের নিয়ে কথা হচ্চিল। আপনি হট্টগোল করেছিলেন কেন আপনারা আসার আগেই এগুলা তৈরি করে ফেলা হয়েছিল। হা হা... যাই হোক আমরা আসলে স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকি। খাবার শুধু আমাদের পেটেই বাঁচিয়ে রাখে না, মনেও বাঁচিয়ে রাখে। :)

      Delete